সিলেট প্রেসক্লাবে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে দেশে স্থিতিশীলতা থাকবে না
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৩:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে দেশে স্থিতিশীলতা থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে বেশি লোক এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। আর কম লোক হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন। সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনু।
মতবিনিময়ে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. মোমেন আরো বলেন, ২০০৮ সালে আমাদের দেশে সর্বোচ্চ ৮৮ পার্সেন্ট ভোট কাস্ট হয়েছিল, কম ভোট পড়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে। তিনি বলেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সাসটেইনএবল ডেমোক্রেসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা যতদিন বাংলাদেশে আছেন, ততদিন বাংলাদেশ বিক্রি হবে না। দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘আপনার ভোট আপনি দেবেন, আল্লাহর ওয়াস্তে ভোটকেন্দ্রে যাবেন’
দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা, শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় সর্বোপরি উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সময়মতো নির্বাচন করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে অঙ্গীকারবদ্ধ। বর্তমান নির্বাচন কমিশন অনেক শক্তিশালী। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করছে। আগামী ৭ জানুয়ারি সকলকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদানের জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার ভোট আপনি দেবেন, আল্লাহর ওয়াস্তে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’
‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবে না’
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান কাউকে এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, আমেরিকার দুটি পর্যবেক্ষক টিম যথাক্রমে আইআরআই এবং এনডিআই নির্বাচনের সার্ভে করছে। একটি টিমের সার্ভে শেষ হয়েছে। আরেকটি টিম আরো দুই মাস ধরে সার্ভে চালাবে। তারা এদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা দেখবে। তবে, বাংলাদেশি অরিজিন আমেরিকান কাউকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেয়া হবে না। এ নিয়ে তাদের সাথে টাসেল চলছে বলে তার মন্তব্য।
‘সরকারি সেবাখাতে এখনো সাধারণ মানুষ বিড়ম্বনার শিকার’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কয়েকটি সরকারি সেবাখাতে এখনও সাধারণ মানুষ বিড়ম্বনার শিকার হন। এর মধ্যে রয়েছে-পাসপোর্ট, বিমানবন্দর ও ট্যাক্স অন্যতম। নির্বাচনের পর এসব খাতের সেবার মান বৃদ্ধি করা হবে। বিগত পনের বছরে সরকার দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বর্তমান সরকার স্মার্ট সিটিজেনসহ স্মার্ট দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ফের সরকার গঠন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে মিডিয়া সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট কারার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সাংগঠনিক সম্পাদক ছালেহ আহমদ সেলিম। ক্লাব সদস্যদের মধ্যে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির, সহ সভাপতি এম এ হান্নান, সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন ও আ ফ ম সাঈদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর ও মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ খালেদ আহমদ ও মো. আফতাব উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আহমাদ সেলিম, নির্বাহী সদস্য এম আহমদ আলী ও আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য আব্দুল বাতিন ফয়সল, মো. মুহিবুর রহমান, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো. ফয়ছল আলম, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, আনাস হাবিব কলিন্স, ফারুক আহমদ, সোয়েব বাসিত, এম এ মতিন, ইউনুছ চৌধুরী, শাহ মো. কয়েছ আহমদ, সুনীল সিংহ, শেখ আশরাফুল আলম নাসির, দিগেন সিংহ, নৌসাদ আহমেদ চৌধুরী, খালেদ আহমদ, মো. দুলাল হোসেন, লুৎফুর রহমান তোফায়েল, এম রহমান ফারুক, আবুল কালাম কাওছার, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী শিপার, শাহ শরীফ উদ্দিন, শাকিলা আক্তার ববি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নয়াসড়কে নির্বাচনী প্রচারণা
গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর নয়াসড়ক এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে না এসে বিএনপি খুবই ভুল করেছে। তারা একটা বড় দল ছিল কিন্তু এখন ধ্বংস হয়ে যাবে। বিএনপিতে নেতৃত্বের অভাব। তারা এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, তারা এখন সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীরা কখনও জয়লাভ করেনি।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সহসভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিসিক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিসিক কাউন্সিলর আব্দুল মোহিত জাবেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েল প্রমুখ।