হবিগঞ্জের ৩ আসনে স্বতন্ত্র ‘হেভিওয়েট’ নিয়ে টেনশনে আ’লীগ-জাপা প্রার্থী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬:১১:১৬ অপরাহ্ন
মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, হবিগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জে স্বতন্ত্র ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী নিয়ে টেনশনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীরা। সেখানকার ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতে স্বতন্ত্র ‘ঈগল’ প্রতীকের প্রার্থীরা রয়েছেন মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী না থাকায় জাতীয় পার্টি প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর । হবিগঞ্জ-২ ও ৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সাথে লড়ছেন দুই হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী। হবিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. আবু জাহির (নৌকা)-এর শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ৪টি আসনে সবমিলিয়ে ৩১ জন প্রার্থী থাকলেও স্বতন্ত্র ছাড়া অন্যদের প্রচার-প্রচারণা তেমন চোখে পড়ছে না।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) : ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪১৮ জন ভোটারের এ আসনটিতে ২০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। এ আসনে এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে জাতীয় পার্টি প্রার্থী সাবেক এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ আসনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর (ঈগল)।
এছাড়াও এখানে প্রার্থী হিসেবে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহেদ, ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের মোস্তাক আহমেদ ফারহানী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. নুরুল হক।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) : ৩ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৫ জন ভোটারের এ আসনে ১টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ আসনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান এমপি এডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান (ঈগল), জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী শংকর পাল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনমোহন দেবনাথ, ইসলামী ঐক্যজোটের শেখ হিফজুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির খাইরুল আলম, বিএনএম এর এসএএম সোহাগ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জিয়াউর রশিদ। তবে এর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খানের (ঈগল) মধ্যে।
সুবিধাজনক অবস্থানে এডভোকেট মো. আবু জাহির
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) : ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮১ জন ভোটারের এ আসনে ২টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ আসনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. আবু জাহির (নৌকা)। এ আসনে বাস্তবে তার কোন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় অনেকটাই নিশ্চিন্তে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও এখানে নির্বাচনে লড়ছেন জাতীয় পার্টি প্রার্থী এমএ মুমিন চৌধুরী বুলবুল, বিএনএম এর মো. বদরুল আলম সিদ্দিকী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. আদম আলী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আব্দুল কাদির, জাকের পার্টির আনসারুল হক, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আবদুল ওয়াহেদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. নোমান হাসান, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. শাহিনুর রহমান।
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) : ২১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান এমপি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুব আলী। এলাকায় একজন সজ্জন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এ আসনে তার বিপরীতে ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এলাকার তরুণ সমাজের কাছে তার সমাজসেবক হিসেবে পরিচিতি রয়েছে।
এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন- জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী আহাদ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আল আমিন, ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের আবু ছালেহ, বিএনএম-এর মো. মুখলেছুর রহমান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আব্দুল মুমিন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐকজোটের মো. রাশেদুল ইসলাম খোকন।