শেষ নির্বাচনী জনসভায় ড. এ কে আব্দুল মোমেন
‘নৌকা বিজয়ী করুন, ব্যাপক উন্নয়ন উপহার দেব’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ৩:৩১:৩১ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : সিলেট-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। পাঁচ বছর আগে প্রিয় সিলেটবাসী আপনাদের আমানত মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত ও সম্মানিত করেছিলেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাকে জয়যুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন এবং আমার বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ হয়। যার মূল কৃতিত্ব আপনাদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় রেজিস্ট্রি মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সিলেট-১ আসনের শেষ নির্বাচনী বিশাল জনসভায় নৌকার প্রার্থী হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট-১ আসনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আলাওর আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় ড.এ.কে আব্দুল মোমেন আরো বলেন,
এর আগে আপনারা আমার বড় ভাই প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দুইবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন এবং আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আপনারা কাজ করার সুযোগ দেওয়ার কারণে তিনি দেশের বিশাল পরিবর্তন এনেছিলেন। আমিও সৌভাগ্যবান প্রধানমন্ত্রী আমাকে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আরও সৌভাগ্যবান যে, এখানে নেতৃবৃন্দ যারা আছেন তাদের অনেকেই এমপি হওয়ার যোগ্য। কিন্তু তারা আমার জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করছেন। আমি আরেকটি বিষয়ে সৌভাগ্যবান এই কারণে আমাদের একজন আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ ও নির্যাতিত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নৌকার বিরুদ্ধে কিভাবে খেলবেন; সেজন্য দলের স্বার্থে স্বেচ্ছায় তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর থেকে তিনি সবসময় আমার সাথে আছেন এবং আমাকে সহযোগিতা করছেন। তিনি আমাদের সাবেক তিনবারের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। শুধু তিনি নন আরেকজন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুল আমাকে সমর্থন দিয়ে নমিনেশন নেননি। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। এটাই আমাদের সিলেটের ঐতিহ্য। আমরা দল মত নির্বিশেষে সিলেটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, আমার প্রত্যাশা ছিল ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে সম্প্রসারিত করা, সেটা চলমান রয়েছে। প্রত্যাশা ছিল সিলেট-ঢাকা ৬ লাইন ও সিলেট-তামাবিল ৬ লাইন করা, সেটিও চলমান রয়েছে। সিলেট-ঢাকা ব্রডগেজ রেললাইনের প্রস্তাব দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের পরে তা বাস্তবায়ন করে দিবেন। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো, আমাদের কাজগুলো দীর্ঘায়িত হয়। যাতে দীর্ঘায়িত না হয়, সেজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছি। তাছাড়া আমার প্রত্যাশা ছিল সারাদেশের মতো সিলেটেও ১০০% বিদ্যুতায়িত হবে। সেটাও হয়েছে।
ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্যান্সার ও হার্ট ইউনিট সহ ১০ তলা বিল্ডিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ওসমানী হাসপাতালের মতো আরেকটি হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণের অনুমোদন হয়েছে। ১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে ২৮০০ কোটি প্রদান করা হয়েছে। তারবিহীন প্রথম বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে পুরো শহরে করা হবে। সুরমা নদীর দুইপাশে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নদী খনন করা হবে। নদীপথে ব্যবসা করার জন্য নদীকে চলাচলের উপযোগী করা হবে। সিলেটকে পর্যটননগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কর্মসংস্থান তৈরির জন্য শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে।
জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির উদ্দিন আহমদ ও আজাদুর রহমান আজাদের যৌথ পরিচালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, সিলেট-১ আসনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো: জাকির হোসেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিণী ও মোমেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা মোমেন, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ মোশাহিদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, নুরুল ইসলাম পুতুল, মো: সানাওর, জগদীশ চন্দ্র দাস, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক লীগ জেলা ও মহানগর শাখার সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক, শাহরিয়ার কবির সেলিম, জেলা ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহানারা বেগম, সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদ, জেলা ও যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, সভাপতি আলম খান মুক্তি, সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গিরদার, জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন কয়েস, এডভোকেট আব্দুর রকিব বাবলু, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ও মহানগর তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন দেবনাথ, শেখ আবুল হাসনাত বুলবুল,মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিবৃন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যবৃন্দ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যবৃন্দ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীবৃন্দ সহ বহু শুভাকাক্সক্ষীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মওলানা গোলাম জাবারু এবং পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি।