সিলেট-২ আসনে লড়াই হবে ত্রিমুখী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১:২৮:০৯ অপরাহ্ন
এমদাদুর রহমান মিলাদ, বিশ্বনাথ থেকে: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ- ওসমানীনগর) আসনে শেষ মুহুর্তে চলছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। নির্বাচনে এ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান রয়েছেন। আগামীকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
নির্বাচন অফিস সূত্রমতে, সিলেট-২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৯ জন (পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮২ জন)। এরমধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৪৯ জন (পুরুষ ভোটার ৯৪ হাজার ৬৬৪ জন ও নারী ভোটার ৮৯ হাজার ৪৮৫ জন) এবং ওসমানীনগর উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৮০ জন (পুরুষ ভোটার ৮১ হাজার ৪৮৩ জন ও নারী ভোটার ৭৯ হাজার ৯৭ জন)। নির্বাচনী আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১২৭টি (বিশ্বনাথ উপজেলায় ৭৪টি ও ওসমানীনগর উপজেলায় ৫৩টি)।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট থেকে প্রার্থী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী। একাধারে ১০ বছর বিরতির পর আবারও তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এবার এ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায় আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এতোদিন সরকার দলীয় এমপি না থানায় উন্নয়ন বঞ্চিত ছিলেন বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরবাসী। যেহেতু প্রধান বিরোধীদল বিএনপি এবার নির্বাচনে নেই, আর আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা। সেহেতু নৌকার প্রার্থী শফিক চৌধুরী বিজয়ী হলে এ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
নৌকাকে বিজয়ী করতে নির্বাচনী মাঠে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও প্রবাসী অনেক কমিউনিটি নেতা। এজন্য শফিকুর রহমান চৌধুরী ভোটের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকার আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের ইয়াহইয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার সময়ে এলাকার দৃশ্যমান উন্নয়ন, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীগর উপজেলা গঠন করা হয়। তার আমলের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে কাজে লাগিয়ে আবারো সিলেট-২ আসন পুনরুদ্ধার করতে চান জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া।
অন্যদিকে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান আলোচনায় রয়েছেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে মুহিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করে তিনি বৈধতা ফিরে পান। অবেশেষে ট্রাক প্রতীক বরাদ্দের পর সরগরম হয়ে উঠে নির্বাচনী মাঠ। বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের দু’বারের সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাঁচবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এ পর্যন্ত একবারও সফল হতে পারেননি। প্রতিবারের ন্যায় এবারও তিনি মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তিনি ২০২২ সালের পৌর নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ফারুক আহমদকে হারিয়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু এক বছরের মাথায় তিনি মেয়র পদে থেকেই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার অনুরাসীরা মনে করছেন, মুহিবুর রহমান একজন সাহসী ও দক্ষ ব্যক্তি। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
এছাড়াও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী আবদুর রব মল্লিক (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী মো. জহির (ডাব), এনপিপি প্রার্থী মনোয়ার হোসাইন (আম)।