সুনামগঞ্জ-৩ এর নির্বাচনী মাঠ নিরুত্তাপ
অপ্রতিরোধ্য মান্নানের নৌকা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২:০৯:০৭ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জ-৩ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসলেও নির্বাচনী মাঠে নিরুত্তাপ বিরাজ করছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী, সমর্থকরা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে ব্যাপক প্রচারে উত্তাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। দলের হেভিওয়েট প্রার্থী টানা তিনবারের নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এবার ‘অপ্রতিরোধ্য প্রার্থী’ হিসেবে জয়ের দ্বারপ্রান্তে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। নৌকার সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অনেকটা পিছিয়ে আছেন এমন আভাস মাঠে পাওয়া যাচ্ছে।
তবে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী জয়ী হবেন এমন দাবি করে প্রচার করছেন মাঠে। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৩ আসনে এবার সংসদ সদস্য পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মান্নান, পাশা ছাড়াও অপর দুই প্রার্থী হলেন জাতীয় পাটির যুক্তরাজ্য প্রবাসী তৌফিক আলী মিনার (লাঙল) ও বাংলাদেশ জাতীয় পাটির তালুকদার মকবুল হোসেন (কাঠাঁল)। চার প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থী প্রচারণায় থাকলেও মাঠে নেই মকবুল হোসেন।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও দল চতুর্থবারের মতো এমএ মান্নানকে মনোনয়ন প্রদান করে। ক্লিন ইমেজের অধিকারী এমএ মান্নান গত ১৫ বছরে তাঁর দায়িত্বকালীন সময়ে জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন। বেশ কয়েকটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য তিনি সবমহলে প্রশংসিত হন। স্বজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এমএ মান্নান তাঁর র্নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চালিয়ে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত নির্বাচনি এলাকার লোকজনের কাছে সুনাম অর্জন করেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। তবে এ আসনে নিজ দলের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। বরং র্দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডনের সঙ্গে দলীয় কোন্দল থাকলেও এবার মান্নান ও ডন বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় ডন সমর্থকরা নৌকার পক্ষে মাঠে কাজ করছেন।
অপর দিকে, সাবেক সদস্য সদস্য এডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী এবার তাঁর দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করে তৃণমূল বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরআগে তিনি ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগের দলীয় দলীয় এমএ মান্নানের নিকট পরাজিত হন। স্থানীয় ভোটারদের মুখে মুখে মান্নানের নৌকা জয়ের কথা শুনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার জানান, ব্যাপক উন্নয়নের জন্য এমএ মান্নান আমাদের কাছে জনপ্রিয়। ভোটে মানুষের আগ্রহ কিছুটা কম থাকলেও মান্নানের নৌকা জয়ের কথা মানুষের মুখে মুখে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু বলেন, একজন সৎ ব্যক্তি হিসেবে এমএ মান্নান সবার কাছে গ্রহলযোগ্য। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে অভুতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। মানুষ ধারাবারিক উন্নয়নের জন্য নৌকাকে বিজয়ী করবে। তবে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরীর দাবি করেছেন, তিনিই জয়ী হবেন এবারের নির্বাচনে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। একারণে তিনি বিজয়ী হবে বলে জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়। আর উন্নয়নের জন্য নৌকাকে মানুষ ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। জগন্নাথপুর নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানান, এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৮ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৯২১ জন ও হিজরা ভোটার ৪ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১৪৫ টি।