সিলেট জেলায় ৬৫৩ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ॥ নাশকতার তথ্য দিলে পুরস্কার
সিলেটে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ৩:৪২:১৫ অপরাহ্ন
কাউসার চৌধুরী
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সিলেটে পাচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার-ভিডিপির প্রায় ২২ হাজার সশস্ত্র সদস্য মাঠে নেমেছেন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ প্লাটুন সদস্য। আর সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের ১ হাজার ১৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৬৫৩ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সিলেট জেলার রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, সিলেটে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনে মোতায়েন রয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্স। সিলেট জেলার সকল ভোট কেন্দ্রের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি রয়েছে।
পরিবেশ-পরিস্থিতি ও ভৌগলিক অবস্থার কারণে ৬৫৩ ভোটকেন্দ্রে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভোটারগণ যাতে নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে এসে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন-এ জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবেন। আমরা একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ প্লাটুন সদস্য। এর বাইরে বিজিবি সদস্য ১ হাজার ৪০০ জন, ৬ হাজার ২১৯ জন পুলিশ সদস্য, র্যাব সদস্য ১১৪ জন ও ১২ হাজার ২৮৬ জন আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ২২ হাজার সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেট মহানগর এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েন থাকবে।
সূত্র জানিয়েছে, জেলার মোট ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় ২০৬টি ও জেলার মধ্যে ৪৪৭ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষায় এসব কেন্দ্রকে বলা হয় অতিগুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্র। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসার মিলে ১৮ জন আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে থাকবেন পুলিশ ২ জন, আনসার (পিসি) ১ জন, আনসার (এপিসি) ১ জন, পুরুষ আনসার ৬ জন ও ৪ জন মহিলা আনসার।
সিলেট জেলা পুলিশের জনবলের মধ্যে, জেলার ৭১৯টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৪৩৮ জন, ৯৬টি মোবাইল টিমে রয়েছেন ৪৮০ জন, স্ট্রাইকিং টিমে ৪৪ জন, নির্বাচনী অফিস ডিউটি টিমে ৪৪ জন, উপজেলা কন্ট্রোল রুমে ১১ জন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ৪০ জনসহ মোট ২ হাজার ১৬৯ জন পুলিশ সদস্য মাঠে নিয়োজিত রয়েছেন।
আর সিলেট মহানগর পুলিশের জনবলের মধ্যে আছেন, সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২৬৪ জন, গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৮২৪ জন, মোবাইল টিমে ৩৬০ জনসহ মোট ২ হাজার ৫০ জন সদস্য মাঠে মোতায়েন আছেন।
আনসার ও ভিডিপির মধ্যে আনসার পিসি ১ হাজার ১৩ জন, এপিসি আনসার ১ হাজার ১৩ জন, পুরুষ আনসার ৬ হাজার ৭৬ জন, মহিলা আনসার ৪ হাজার ৫২ জন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১৩০ জনসহ মোট ১২ হাজার ২৮৬ জন। এছাড়াও মোতায়েন রয়েছে ব্যাটালিয়ন আনসারও।
নাশকতার তথ্য দিলে মিলবে পুরস্কার
এদিকে, পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় জানানো হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা নাশকতা করবে-তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পুলিশকে জানালে পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্য দাতা পুরস্কার হিসাবে নগদ ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন বলে বার্তায় জানানো হয়। এতে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।
এছাড়াও নির্বাচনে যে কোনো ধরনের অনিয়ম ও সহিংস কর্মকা-ের অভিযোগ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ জানানো যাবে।