সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে ১২টিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস
সহিংসতার আতংকের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ৪:০২:৫০ অপরাহ্ন

নূর আহমদ
বহুল প্রতীক্ষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ। ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের দুই সহ¯্রাধিক ভোটকেন্দ্র। সিলেট বিভাগের চার জেলার ৬৬ লাখ ২০ হাজার ৬শ’ ৬ জন ভোটার ১৯ আসনের ১১৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। এর মধ্যে ১২টি আসনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। সে লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
আজ রোববার সকালে ভোটকেন্দ্রে পৌছে যাবে ব্যালট। সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে বিকেল ৪টায়। অন্যদিকে বিএনপি বিহীন নির্বাচন ঘিরে উৎসবের পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও রয়েছে জনমনে। শুক্রবার রাতে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের চারটি কেন্দ্রে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিছুটা আতঙ্কেও রয়েছে। অবশ্য প্রার্থীরা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে টানতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সেনাবাহিনীও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছে।
সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, নির্বাচনী সরঞ্জাম গতকাল শনিবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার থেকে উপজেলাগুলোতে সকল সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়। সেখান থেকে রাত ৩টায় প্রিসাইডিং অফিসারদের হাতে ব্যালট পৌছে যাবে।
সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইফুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব প্রক্রিয়াই এখন চূড়ান্ত। আজ রোববার শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৯টি আসনে ১১৮ জন প্রার্থী লড়ছেন। ২ হাজার ৮শ’ ৯৭টি ভোটকেন্দ্রে ৭৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭শ’ ৮৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় চার মন্ত্রী অনেকটা নির্ভার
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জে চারটি করে আসনে এবং হবিগঞ্জে ৩টি ও মৌলভীবাজারে একটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন অনেকটা নির্ভার রয়েছেন।
সিলেট : সিলেট জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এবার মোট ভোটার ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ জন। পুরুষ ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫, নারী ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬, তৃতীয় লিঙ্গের ১০ জন ভোটার রয়েছেন। সিলেটের ৬টি আসনে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সিলেট-১ (সিলেট সিটি কর্পোরেশনভুক্ত এলাকা এবং সিলেট সদর উপজেলা): এ আসনে মোট ভোটার ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮শ’ ৬৭ জন। হিজড়া ভোটার ৭ জন। এ আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন (নৗকা), সাংস্কৃতিক মহাজোটের আব্দুল বাছিত (ছড়ি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইউসুফ আহমদ (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক (মিনার) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস এর সোহেল আহমদ চৌধুরী (ডাব)। এই আসনে ভোটকেন্দ্র মোট ২শ’ ১৫ টি। এ আসনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অনেকটা নির্ভার।
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর): এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৯ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮২ জন। নির্বাচনী আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১২৭টি (বিশ্বনাথ উপজেলায় ৭৪টি ও ওসমানীনগর উপজেলায় ৫৩টি)। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী এহিয়া আহমদ চৌধুরী ইয়াহিয়া, বিশ্বনাথ পৌর মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক),গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী আবদুর রব মল্লিক (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী মো. জহির (ডাব), এনপিপি প্রার্থী মনোয়ার হোসাইন (আম)। এই আসনে ভোটকেন্দ্র মোট ১শ’ ২৮ টি। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে সাবেক এমপি এহিয়া ও বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং বালাগঞ্জ উপজেলা) : এ আসনে মোট ৩,৮৬,৪৫৩ জন ভোটার। এর মধ্যে ১,৯৬,১৬৭ জন পুরুষ ও ১,৯০,২৮৫ নারী ভোটার। হিজড়া ১ জন। এ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন-বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব (নৌকা), ইহতেশামুল হক দুলাল (ট্রাক), মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (লাঙ্গল), আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম), শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি), মইনুল ইসলাম (মিনার) ও ফখরুল ইসলাম (ঈগল)। এই আসনে ভোটকেন্দ্র মোট ১শ ৫১ টি। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে বিএমএ মহাসচিব ডা: ইহতেশামুল হক চৌধুরীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এবং জৈন্তাপুর উপজেলা) : এ আসনে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১শ’ ২৩ জন ভোটার। এর মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১শ’ ১০ জন পুরুষ ও ২ লাখ ২৯ হাজার ১২ জন নারী। হিজড়া ১জন। এ আসনে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যজোট এর নাজিম উদ্দিন (মিনার) ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন ( সোনালী আঁশ)। এই আসনে ভোটকেন্দ্র মোট ১৬৯টি। এ আসনেও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বলে স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছেন।
সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা) : এ আসনে মোট ৪ লাখ ২ হাজার ৩২৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার ৬শ ৬৩ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬২ নারী। এ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আহমদ আল কবির (ট্রাক), জাতীয় পার্টি প্রার্থী শাব্বীর আহমদ (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী বদরুল আলম (ডাব) ও মুসলিম লীগ প্রার্থী খায়রুল ইসলাম (হাত পাঞ্জা) ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দিন আহমদ শিকদার ( সোনালী আঁশ)। অবশ্য জাপা প্রার্থী শাব্বির আহমদ নির্বাচন থেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। এই আসনে ভোট কেন্দ্র মোট ১৫৮ টি। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদের সাথে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রার্থী মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ও ড. আহমদ আল কবিরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে।
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা) : এ আসনে মোট ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭শ ৫৩ জন ভোটার। এর মধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪শ ৯৪ জন পুরুষ ও ২লাখ ৩৫ হাজার ২শ ৫৮ জন নারী। হিজড়া ১জন। এ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নূরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী ( সোনালী আঁশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন (ঈগল), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোট এর সাদিকুর রহমান (মিনার) ও আতাউর রহমান (ছড়ি)। এই আসনে ভোট কেন্দ্র মোট ১শ’ ৯২টি। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নূরুল আহমদ নাহিদ, তৃণমূল বিএনপির শমসের মবিন চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন।
সুনামগঞ্জ : সিলেট জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, জেলায় এবার মোট ভোটার ১৯ লাখ ২২ হাজার ১শ’ ৬৯ জন। পুরুষ ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৪শ’ ২৯ জন, নারী ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭শ ২৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৭০০ টি। এই জেলার ৫টি আসনে ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা, তাহিরপুর এবং জামালগঞ্জ) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪শ’ ৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৫ হাজার ১০ ও নারী ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭শ’ ৪৫ জন। হিজড়া ভোটার ৫ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮ জন। এরমধ্যে রনজিত সরকার (নৌকা), বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (কেটলি), সেলিম আহমদ (ঈগল), আব্দুল মান্নান তালুকদার (লাঙ্গল), হারিছ মিয়া (একতারা), আশরফ আলী (সোনালী আঁশ) ও নবাব সালেহ আহমদ (ডাব) প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রনজিত সরকারের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই এবং শাল্লা) : এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮শ’ ৯৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬শ ৪৭ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪৮ হাজার ২শ’ ৫১ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (নৌকা), বর্তমান সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্ত (কাঁচি), মিহির রঞ্জন দাস (কবুতর) ও মিজানুর রহমান (ঈগল)। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের সাথে বর্তমান সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
সুনামগঞ্জ-৩ (জুগন্নাথপুর এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) : এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬শ’ ৫৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭শ’ ২৮ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৯শ’ ২২ জন। হিজড়া ভোটার ৪ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান (নৌকা), এডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী (সোনালী আঁশ), তৌফিক আলী (কাঁঠাল) ও তালুকদার মো: মকবুল হোসেন (লাঙ্গল)। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এ আসনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা) : আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪১ হাজার ৮শ’ ৩৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩শ’ ৬৮ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪ শ ৬৩ জন। হিজড়া ভোটার ২জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন। সাবেক সচিব ও পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক (নৌকা), বর্তমান এমপি পীর ফজলুর রহমান (লাঙ্গল), এনামুল কবীর ইমন (ঈগল), মোবারক হোসেন (কাঁচি), মোহাম্মদ দিলোয়ার (আম) ও দেওয়ান শামছুল আবেদীন (নোঙ্গর)। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে জাপা প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা) : এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার ১শ’ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭শ ৫ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৩ শ ৯৪ জন। হিজড়া ভোটার ১ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন। বর্তমান এমপি মুহিবুর রহমান মানিক (নৌকা), শামীম আহমদ চৌধুরী (ঈগল), আবু সালেহ (একতারা), আজিজুল হক (আম), নাজমুল হুদা (লাঙ্গল), আইয়ুব করম আলী (উদীয়মান সূর্য), মনির উদ্দিন (বাইসাইকেল), আব্দুল জলিল (গামছা) ও আশরাফ হোসেন (টেলিভিশন)। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিকের সাথে ঈগল মার্কার প্রার্থী শামীম চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এবার মোট ভোটার ১৭ লাখ ১ হাজার ৭শ’৪৫ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৬শ’ ৩৫ টি। এই জেলার ৪টি আসনে ২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হবিগঞ্জ-১ (বাহুবল-নবীগঞ্জ)- দুটি উপজেলা, ১টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৯ হাজার ৩শ ৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৬৯৫ ও নারী ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ১২ হাজার ৬৮৪ জন। ওই আসনে ভোটকেন্দ্র ১৭৭টি। এ আসনটিতে এবার ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া (ঈগল), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবু (লাঙ্গল), ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের মোস্তাক আহমেদ ফারহানী (মিনার) ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মোঃ নুরুল হক (গামছা) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেয়া চৌধুরীর সাথে জাপা প্রার্থী আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) : দুটি উপজেলা, ১টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৮৪ হাজার ৯ ও নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ২০ জন। ওই আসনে ভোট কেন্দ্র ১৫০টি। এবার ওই আসন থেকে নির্বাচনী মাঠে লড়ছেন ৮ জন প্রার্থী। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত ময়েজ উদ্দিন শরীফ রয়েল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ খান এমপি (ঈগল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনমোহন দেবনাথ (গামছা), ইসলামী ঐক্যজোটের শেখ হিফজুর রহমান (মিনার), তৃণমূল বিএনপির খাইরুল আলম (সোনালী আশঁ), বিএনএম এর এসএএম সোহাগ (নোঙ্গর), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশর মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ জিয়াউর রশিদ (ডাব) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে ঈগল মার্কার প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) : ৩টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ওই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৯৭ হাজার ৩০৭ ও নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬০ জন। ওই আসনে ভোট কেন্দ্র ১৩১টি। ওই আসন থেকে লড়ছেন ৯ প্রার্থী। এরা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য মোঃ আবু জাহির (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এ মুমিন চৌধুরী বুলবুল (লাঙ্গল), বিএনএম এর মোঃ বদরুল আলম সিদ্দিকী (নোঙ্গর), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মোঃ আদম আলী (ফুলের মালা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ আব্দুল কাদির (আম), জাকের পার্টির আনসারুল হক (গোলাপ ফুল), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোঃ আবদুল ওয়াহেদ চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ নোমান হাসান (ডাব), মুক্তিজোট (জেডিপি) এর মোঃ শাহিনুর রহমান (ছড়ি) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) : ২টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা ও ২১ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে মোট ভোটার ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১২ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯২ ও নারী ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৪ জন। ওই আসনে ভোটকেন্দ্র ১৭৭টি। এবার ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন (ঈগল), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহাদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ আল আমিন (ডাব), ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের আবু ছালেহ (মিনার), বিএনএম এর মোঃ মুখলেছুর রহমান (নোঙ্গর), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোঃ আব্দুল মমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐকজোটের মোঃ রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এ আসনে বিমান প্রতিমন্ত্রীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সুমনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এবার জেলা ৪টি আসনে ৯টি উপজেলায় ৬৩৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৮৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। অর্ধেকেরও বেশি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনে ৬৩৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১১৫৬ জন সহ-প্রিজাইডিং অফিসার ও ২৩১২ পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার ১ আসন ॥ জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, জেলায় এবার মোট ভোটার ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৫শ’ ৪২ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৫৪৯টি। এই জেলার ৫টি আসনে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-১ আসন। এ আসনের মোট ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৩৯। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬০ হাজার ১৬৩ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪শ’ ৭৭ জন। এ এ আসনে মোট প্রার্থী হলেন ৪ জন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন (নৌকা), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (সোনালী আশঁ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: মইনুল ইসলাম (ট্রাক) ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল)। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় পরিবেশমন্ত্রী এ আসনে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
মৌলভীবাজার-২ আসন : একটি মাত্র কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-২ আসন। এ আসনের ১৩টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭২। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩৫ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৭ জন।
আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল (নৌকা), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি এম এম শাহীন (সোনালী আশঁ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ এ কে এম সফি আহমদ সলমান (ট্রাক), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল মতিন (কাঁচি), জাতীয় পার্টির আব্দুল মালিক (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এনামুল হক মাহতাব (মোমবাতি), ইসলামী ঐক্যজোটের আছলাম হোসাইন রহমানী (মিনার) ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মো. কামরুজ্জামান সিমু (কুলা)। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী সফি আহমদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।
মৌলভীবাজার-৩ আসন : মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৩ আসন। এ আসনের মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৩শ ৯২। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩১ হাজার ৮শ’ ৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৭ জন। হিজড়া ভোট ৩জন। এ আসনে মোট প্রার্থী ৭ জন।
প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান (নৌকা), জাসদের প্রার্থী আব্দুল মোসাব্বির (মশাল), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলতাফুর রহমান (লাঙ্গল), ফাহাদ আলম (ছড়ি), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী আব্দুর রউফ (মোমবাতি), ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী তাপস কুমার ঘোষ (হাতুড়ি) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী আবু বকর (আম)।
মৌলভীবাজার-৪ আসন : শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৪ আসন। এ আসনের মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৫৯ হাজার ১শ ৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩১ হাজার ৩শ’ ১০ এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭শ’ ৯৩ জন। এ আসনে মোট প্রার্থী হলেন ৩ জন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ (নৌকা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী মুহিদ হাসানী (মোমবাতি) ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন (মিনার)।