হবিগঞ্জে বিজয়ী চার প্রার্থীই আইনজীবী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১:২৬:১৫ অপরাহ্ন

মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, হবিগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জ জেলার ২ আসনে নৌকা, ২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বিজয়ী চার প্রার্থীই আইনজীবী। ৪টি আসনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩১জন। শেষ মুহূর্তে হবিগঞ্জ-১ ও হবিগঞ্জ-২ আসনের ২ জন প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। বাকীদের অধিকাংশই নামেমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্ধারিত সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় ২৪জন প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও জেলার অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) একটি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কয়েকটি চা-বাগান ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অধ্যুষিত এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ঈগল প্রতীক নিয়ে ৭৫ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক এমপি জাপার আব্দুল মুনিম চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৩০ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়েছেন।
বিজয়ী প্রার্থী কেয়া চৌধুরী প্রয়াত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরীর কন্যা। আওয়ামী লীগ উপজেলা কমিটি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের একটি বড় অংশ জাপা প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেও কেয়া চৌধুরী তার জনসম্পৃক্ততার কারণে তৃণমূল পর্যায়ে ভোটারদেরকে আকৃষ্ট করার সুফল পেয়েছেন। এ আসনে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ও চা-শ্রমিক যে কোনো নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) একটি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯৯ হাজার ৯শ’ ৪৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন এডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৬শ ০৬ ভোট। বিজয়ী প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল এ আসনের সাবেক এমপি মরহুম এডভোকেট শরীফ উদ্দিন আহমেদ এর পুত্র। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন গুলোর অধিকাংশ নেতার বিরোধিতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ খানের পরাজয়ের মূল কারণ হিসাবে অনেকেই ধারণা করছেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই এর কথা শোনা গেলেও ফলাফলে বিস্তর পার্থক্য সৃষ্টি করে নৌকা প্রার্থী বিজয়ী হন।
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) দুটি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির। তার প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৬শ’ ৫টি। এ আসনে নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় অতি সহজেই তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাপার আব্দুল মুনিম চৌধুরী (লাঙ্গল)। তার প্রাপ্ত ভোট ৪ হাজার ৭৬টি।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) দুটি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে চমক সৃষ্টি করে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন (ঈগল)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বেসরকারী বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি মোঃ মাহবুব আলী। তার প্রাপ্ত ভোট ৬৯ হাজার ৫শ’ ৪৩টি। তিনি এ আসনের সাবেক এমপি মরহুম মাওলানা আছাদ আলীর পুত্র। বিজয়ী প্রার্থী এই নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসাবে পরিচিত ২০টি চা-বাগানের শ্রমিকদের ও প্রচুর ভোট পেয়েছেন। এছাড়া, সোস্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত কয়েক বছর যাবৎ জনসম্পৃক্ততা বজায় রাখায় সহজেই ভোটারদেরকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন।