সিলেটে তীব্র শীতে বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৩১:৩৩ অপরাহ্ন
এনামুল হক রেনু
টানা কয়েক দিনের শীতের দাপটে সিলেট জুড়ে চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণী বিতান, শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের শীতের কাপড়। শপিংমলের চেয়ে ফুটপাতের দোকানেই ভিড় লক্ষণীয়। ভ্রাম্যমাণভাবে পসরা সাজিয়ে বসা দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষদের ভিড়ই সবচেয়ে বেশী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর জিন্দাবাজার, জল্লারপাড় রোড, লামাবাজার, বন্দরবাজার হকার্স মার্কেট, আম্বরখানা, তালতলা, বারুতখানা, নয়াসড়ক, চৌহাট্টা, কুমারপাড়াসহ সবগুলো মার্কেটেই শীতের কাপড়ের ব্যাপক সমাহার। ব্যবসায়ী ও দোকানিরা ক্রেতাদের চাহিদা আর রুচির কথা মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছেন এসব পোশাকের। এরমধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, হুডি, ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ব্লেজার, স্লিভলেস কোট, কটি, জিন্সের মোটা শার্ট-জ্যাকেট, ডেনিম শার্ট, উইন্টার কোট, উলের তৈরি শাল, খাদির শাল, মাফলার, কানটুপি, হাত-পায়ের মোজা অন্যতম।
শপিংমল ও নানা ব্যান্ডের দোকানের ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের অধিকাংশ ক্রেতাই তরুণ-তরুণী। সেজন্য তাদের পছন্দের কথা চিন্তা করে দোকানে ক্যাজুয়াল ফ্যাশনের কালেকশনই বেশি রাখা হয়েছে। এবার জ্যাকেটের চাহিদা বেড়েছে। এরমধ্যে জেন্টস লেদার জ্যাকেট, জেন্টস ফুল স্লিভ জ্যাকেট, লেডিস ফিট ফুল স্লিভ জ্যাকেট, জেনস কটন জ্যাকেট, ফুল স্লিভ জেন্টস ক্যাজুয়াল জ্যাকেট, জেন্টস হুডি জ্যাকেট অন্যতম। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে এসব জ্যাকেটের প্যাটার্নেও এখন আনা হয়েছে বেশ নতুনত্ব। সিনথেটিক এবং মিক্সড লেদারের জ্যাকেটও রয়েছে দোকানগুলোতে। এছাড়াও ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন প্যাটার্ন স্টাইল এবং গুণগত মানের কাপড় দেখা গেছে দোকানগুলোতে।
তবে ফুটপাতের প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ দোকানে নারী ও শিশুসহ নানা বয়সীদের বেশ ভিড় ছিল লক্ষণীয়। নিম্ন ও মধ্য আয় থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ এসেছেন গরম কাপড়ের খোঁজে।
নগরীর জিন্দাবাজারে কথা হয় ভ্রাম্যমাণ গরম কাপড় ব্যবসায়ী কবির হোসেনের সাথে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে চাহিদা বেশি ট্রাউজার, ফুলহাতা গেঞ্জি, জ্যাকেট, কোট ও বাচ্চাদের বিভিন্ন পোশাক।
জিন্দাবাজারে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতার কাছে হাতমোজা কিনতে আসা গৃহিনী রাহনুমা জানান, গায়ে গরম কাপড় থাকলেও তীব্র শীতে হাত ও পা অবশ হয়ে আসছে। তাই তিনি হাত মোজা কিনতে এসেছেন।
এদিকে, প্রতিবছর শীতের আগমনে সিলেট নগরীতে মৌসুমী হকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়। বাড়তি রোজগারের আশায় এসব হকার ফুটপাতের পাশাপাশি অলিগলিতেও ফেরি করে। অনেকে শীতের কাপড় আগে কিনে মজুত করলেও তা বিক্রি করছেন এখন।
নরসিংদি থেকে আসা মোজা, মাফলার ও গরম টুপির ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা আবদুল মজিদ জানালেন, তিনি প্রতিবছর শীত মৌসুমে সিলেটে আসেন এসব পণ্য বিক্রি করতে। ডিসেম্বর মাসে তেমন বিক্রি না হলেও গত কয়েকদিন থেকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তার বিক্রিও বেড়েছে।
তবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গতকাল সোমবার থেকে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা। সারা দেশে চলমান কুয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতি কেটে সূর্যের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হতে পারে ১৭ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘দেশের অন্যান্য স্থানের মতো গতকাল সোমবার সিলেটেও সূর্যের আলো পাওয়া গেছে। তবে, বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ থাকবে।