রাজনগরে মুজাইক ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত শীতকালীন শিম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২:১৩:৪১ অপরাহ্ন
আব্দুল আজিজ , রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে : রাজনগরে শীতকালীন সবজি শিম এর ক্ষেতে মুজাইক ভাইরাস দেখা দিয়েছে। এতে বাড়ন্ত পর্যায়ের গাছের ডগা মরে পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় চাষীরা জানান, বেশিরভাগ গ্রামের শিম ক্ষেতে বিপর্যয় নেমেছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রথমে দু’একটি গাছে এই রোগ দেখা দেয়। অল্প দিনে পুরো বাগানে ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে যায়। ফুল ও ফল আসার সময় আক্রান্ত গাছগুলো মরে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মুজাইক ভাইরাস সবজির জন্য বিপদজনক সংক্রামণ ভাইরাস। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকদের আক্রান্ত গাছ কেটে মাটিতে পুতে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
এছাড়াও বরবটিতে জাবপোকা বা ছাইপোকা,পচা রোগ বা মড়ক, লাউ, কুমড়া ও মিষ্টি লাউয়ে মাছিপোকার আক্রমণ রয়েছে। আমরা কৃষকদের উপযুক্ত মানের কীটনাশক ব্যবহার করতে বলছি। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শিম ক্ষেতে মুজাইক ভাইরাসের আক্রমণে অনেক চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কোন ক্ষেতে ফুল আসলেও সবজির ফলন নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, প্রতিবছর বাড়ির আঙ্গিনা ও চারা ভূমিতে শীতকালীন এই সবজি চাষ করেন। এই মৌসুমে ফল দেওয়ার সময় শিমের পাতা হলুদ হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে।
রাজনগর উপজেলা সদরের সবজি চাষী হোসন আলী বলেন, অল্প জমিতে সবজি চাষ করেছিলাম। এই রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে অন্য সবজি রক্ষা করতে শিম ক্ষেত কেটে ফেলেছি। রাজনগর ইউনিয়নের কর্ণিগ্রামের মোতালিব খান বলেন, রাস্তার পাশে প্রতিবছর শিম চাষ করে প্রচুর পরিমাণ শিম সংগ্রহ করতাম। এ বছর শিমে ভাইরাসজনিত কারণে মৌসুম শুরু হলেও শিমের ফলন আসছে না। আমরা বড় হতাশার মধ্যে রয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কথা হয় এরকম ক্ষতিগ্রস্ত চাষী আনোয়ার মিয়া, শহীদ মিয়া, আবাস মিয়া, সুবলসহ অনেকের সাথে।
এ বিষয়ে কথা হলে রাজনগর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্বপন কুমার পাল জানান, তারা বিভিন্ন গ্রামে রোগের প্রাদুর্ভাব পেয়েছেন। এ নিয়ে কৃষকের সঙ্গে কথা বলে রোগ দমনের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করলে এ রোগ দমন করা সম্ভব।
রাজনগর উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল আমিন জানান, ভাইরাসজনিত মুজাইক রোগ শিমের মারাত্মক ক্ষতি করে। এ রোগ সবজির জন্য বিপদজনক। রোগ দমনের জন্য নিয়মিত টিডো নামের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। বাকি রোগগুলো দমনে পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে। আক্রান্ত শিমের ডাটাগুলো কেটে ফেলে মাটিতে পুতে দিলে ভালো হয়।