২৫ বছর পর হত্যা মামলার রায়, সিলেটে দুইজনের যাবজ্জীবন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২:৫১:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটের খাদিমনগরে আব্দুল মুতলিব হত্যা মামলায় দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দেওয়া হয়।
হত্যাকান্ডের ২৫ বছর পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামাণিক এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার খাড়াউড়া গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে, বর্তমানে ইসলামপুর ধনুকান্দি চামেলীবাগ আবাসিক এলাকার ১০৫নং বাসার বাসিন্দা মো. শওকত আলী এবং সিলেট নগরীর টিলাগড় ব্রহ্মণপাড়ার মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম। রায় ঘোষণাকালে তারা পলাতক রয়েছেন।
আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) মোঃ আহম্মদ আলী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, খাদিমনগর এলাকার ধনুকান্দি গ্রামের মৃত সাইয়িদ উল্লাহর ছেলে আব্দুল মুতলিবের সাথে শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের জমি-জমা কেনাবেচা সংক্রান্ত বিষয়ে টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে শওকত আলী ও আব্দুর রহিম নাস্তা খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে আব্দুল মুতলিবকে ডেকে নিয়ে যায়।
পরদিন ২৪ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় ১১১১নং একটি জিডি এন্ট্রি করেন তার ভাই মো. তাহির আলী। অন্যদিকে পুলিশ আরামবাগ এলাকা থেকে আব্দুল মুতলিবের লাশ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে সিলেট নগরীর মানিকপীর (র.) টিলায় দাফন করে। পরে পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে আব্দুল মুতলিবের লাশের ব্যবহারী কাপড়-চোপড় দেখালে তার ভাই ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা লাশ সনাক্ত করেন।
এরপর সিলেট জেলা প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল পুলিশ আব্দুল মুতলিবের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে লাশ সনাক্ত করেন তার পরিবার।
পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আব্দুল মুতলিবের লাশ হযরত শাহপরান (র.) মাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল মুতলিবের ভাই মো. তাহির আলী কতোয়ালী থানায় শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং-৭১ (২৬-০৪-১৯৯৮)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন কতোয়ালী থানার এসআই আবু জাফর ২জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৩৮৯) দাখিল করেন এবং ২০০১ সালের ১৭ জুলাই চার্জগঠন (অভিযোগগঠন) করে আদালত এ মামলার বিচারকাজ শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল মঙ্গলবার আদালত আসামী মো. শওকত আলী ও আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন কারাদ-সহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড এবং ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে স্টেইট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট মো. আমিরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।