দিরাইয়ে হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়ম, কৃষকদের মানববন্ধন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১:৫৭:০৬ অপরাহ্ন
দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা: দিরাইয়ে টাংনীর হাওর (জলডুভা ভাঙ্গা) রক্ষাবাঁধের ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩০ নং পিআইসির কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বাঁধ এলাকায় মানববন্ধন করেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষক ও এলাকাবাসী। উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ভাটিধল গ্রামবাসীর উদ্যোগে গত শুক্রবার বিকেলে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
ইউনিয়নের ৫ গ্রামের স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী বলেন, প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে অদক্ষ ব্যক্তিদের কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে হাওর পাড়ের কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। সময় মতো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। মানববন্ধনে কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভাটিধল গ্রামের কৃষক জাবেদ মিয়া, আব্দুল শহিদ, অজুদ মিয়া, দীপক, কৃপেশ রঞ্জন বুলুসহ এলাকাবাসী জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ২৭ ও ২৮ নং (পিআইসি) জলডুবা ক্লোজারের কাজ টেকসই করার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পিআইসি সিন্ডিকেটের লোকজন শুরুতেই কাদা মাটি ফেলে বাঁধকে দুর্বল করে ফেলে এবং দুরমুজ ও কমপেকশন না করায় এ ক্লোজারটি ঝুঁকিপূর্র্ণ থাকছে।
৫ গ্রামের কৃষকদের পক্ষে কৃষক ওয়াতির মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “এক অদৃশ্য কারণে ইউপি চেয়ারম্যান আলি আহমদ ও এসও মোনায়েম হোসেন মাঝপথে এসে মূল বাঁধের কাজ না করে পাশে থাকা জলডুবা বিলের প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধের কাজে নতুন করে পিআইসি কমিটি গঠন করে বড় অংকের অর্থ বাণিজ্যের পাঁয়তারা করছেন। এ কাজের জন্য ১৪ লাখ টাকা যথেষ্ট। কিন্তু অহেতুক বাজেট বাড়িয়ে বিল রক্ষায় বাঁধের কাজ করলে একদিকে সরকারের টাকার অপচয় হবে, অন্যদিকে হাওরে থাকা প্রায় ২০০ একর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান কৃষকরা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জমির উদ্দিন, আব্দুল হাই, মঈন উদ্দিন, আলেক মিয়া, আব্দুল মালিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন। এ বিষয়ে আজ রোববার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করবেন কৃষকরা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মোনায়েম হোসেন বলেছেন, জলডুবা ক্লোজারটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, বাঁধটি রক্ষা করা কঠিন। পাশের গর্তের ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বাঁধটি। দেড় কিলোমিটার এ বাঁধের কাজ না করলে টাংনী হাওর রক্ষা করা যাবে না।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, টাংনী হাওর উপর প্রকল্পের ২৯ ও ৩০ নং পিআইসিতে নামমাত্র মাটি ফেলা হয়েছে। এখানে ৪ ফুট উচ্চতায় মাটি ফেলার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পুরাতন মাটি খুঁড়ে নতুন করা হচ্ছে। স্লোপ নেই, দুরমুজ কমপেকশন কোনটাই করা হয়নি। পাহাড়িঢল কিংবা সামান্য পানির চাপ হলেই হাওরে পানি ঢুকবে।