বিয়ে হলো রায়নগরে শিশু পরিবারে বেড়ে উঠা বিউটি আক্তারের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১:২৬:১৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোটার : সিলেট সরকারি শিশু পরিবার রায়নগরে বেড়ে উঠা বিউটি আক্তারের বিয়ে গত শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী, এমপিসহ শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আনন্দঘন পরিবেশে রায়নগর শিশু পরিবারের হলরুমে এই বিয়ে হয়। বিউটি আক্তারের বিয়েকে ঘিরে শিক্ষিকা ও কর্মকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন। তারা বিভিন্ন বাসায়, প্রতিষ্ঠানে পৌছে দিয়েছেন বিয়ের কার্ড। আমন্ত্রণ পেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তি উপহার সামগ্রী দিয়েছেন।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজনে কোন কমতি ছিল না। কনের গায়ে হলুদ, অতিথি আপ্যায়ন-সবকিছু হয়েছে স্বাভাবিক বিয়ের মতো। টিভি ফ্রিজ সেলাই মেশিনসহ অনেক কিছুই উপহার উঠে অনুষ্ঠানে। অনাথ মেয়েটির মা-বাবা না থাকলেও সেখানে তার শুভাকাংখী অনুরাগী হয়ে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়েছিলেন।
এতে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। আরো ছিলেন মাওলানা হুসামউদ্দিন চৌধুরী এমপি, সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক মো শহীদুল ইসলাম, সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ, সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো আব্দুর রফিক, সিলেট সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) এর উপ-তত্বাবধায়ক, মুনতাকা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুচিত্রা রায়, সিলেট জেলার সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, সিলেট সরকারি শিশু পরিবার বালিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং সমাজসেবার তালিকাভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুর রফিক জানান, ২০০৮ সালের ২০ মে সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে র্যাব ছয় বছর বয়সী শিশু বিউটিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে। পরিচয়হীন অবস্থায় খুঁজে পাওয়ার পর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলগ্রহণকারী’ আদালতের নির্দেশে তাকে সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের পরিচালনাধীন ছোটমণি নিবাসে ভর্তি করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে ছোটমনি নিবাস থেকে মেয়েটিকে রায়নগরে সরকারী শিশু পরিবারে (বালিকা) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সে সপ্তম শ্রেণি পাস করে এবং কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
মেয়েটির ঠিকানা অজ্ঞাত বলে পারিবারিকভাবে তাকে পুনর্বাসন করা সম্ভব হচ্ছিল না বিধায় প্রতিষ্ঠান থেকে বিবাহের মাধ্যমে পুনবার্সনের চেষ্টা করা হয় এবং একজন আগ্রহী পাত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে পরিচালক, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয় সিলেট এবং উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সিলেটের উদ্যোগে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং কমিটির সভায় পাত্রের জীবনবৃত্তান্ত উপস্থাপন করা হয়। জৈন্তাপুর উপজেলার পশ্চিম ঠাকুরেরমাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম ও রোজিনা বেগমের ছেলে মো. পারভেজ আহমেদ এর সাথে বিউটির বিয়ে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে বিউটি আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাদের সঙ্গে বড় হয়েছি, সেই ছোট বোনদের ছেড়ে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’
বর মো. পারভেজ আহমেদ সবার দোয়া চেয়েছেন। পারিবারিক সম্মতিতে এই বিয়েতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের ভালোবাসায় তিনি অভিভূত।