সিলেট সিটি কর্পোরেশন’র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
আমার লক্ষ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৯:০৪ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ কোটি মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসেবে আমাকে বেছে নিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই আমার কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মন্ত্রীত্ব পেয়ে আমার একটাই লক্ষ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা।
তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেট সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমেদ।
সংবর্ধিত অতিথি ডা. সামন্ত লাল সেন আরো বলেন, আমাকে ধন্যবাদ কিংবা সংবর্ধনা দেয়ার কিছু নেই। কারণ, সিলেটেই আমার বাড়ি। আমি মায়ের টানেই বাড়িতে এসেছি। প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা উন্নত করার কাজের অংশ হিসেবে সিলেটের কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছি। দেখেছি সেখানকার অবস্থা। হাসপাতালগুলোতে জনবল সংকট রয়েছে এবং ভবন সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে। আমি সিলেটের সন্তান হিসেবে এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নতি করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বানিয়াচং উপজেলা থেকে আমার কাজ শুরু হয়েছে। তখন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ইলেকট্রিসিটি, মোবাইল ছিলোনা। গ্রাম থেকে আমার কাজ শুরু হয়েছে। সুতরাং আমি জানি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোথায় কি করতে হবে। তিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেন, আমি পারবো। আপনারা আমার জন্য দোয়া আশীর্বাদ করবেন যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভালো ফল নিয়ে আসতে পারি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। স্বাস্থ্য খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই ডা. সামন্ত লাল সেনের মতো যোগ্য মানুষের হাতে এ দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এমপি বলেন, আপনার মতো ভূমিপুত্রকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে সিলেটবাসী গর্বিত। মানুষের প্রতি মমতার কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে এ গুরু দায়িত্ব প্রদান করেছেন। আপনার সফলতা পুরো সিলেটবাসীর সফলতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি বিষয়। আর এ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে আপনার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব স্বাস্থ্য খাতের দুর্নাম ঘুচবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, স্বাস্থ্য খাতের কান্ডারি হিসেবে আপনার প্রতি সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যাশা। সিলেটবাসীর সুবিধার্থে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বারডেম হাসপাতাল পর্যায়ে উন্নীত করার দাবি জানান তিনি।
সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার সিলেটকে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তুলতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। সিলেট বিভাগের ১৯ জন সংসদ সদস্য তাঁর সাথে থাকবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি চ্যালেঞ্জিং মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সফল হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সিলেট চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন সূচকে সিলেট বিভাগ পিছিয়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
এ ছাড়া, অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান পিপিএম, সিলেট জেলার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী, সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ। সংস্কৃতি কর্মী রজত কান্তি গুপ্ত এবং জান্নাতুল নাজনীন আশার যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ মোহাম্মদ আলী, গীতা থেকে পাঠ করেন সিসিকের বাজার তত্ত্বাবধায়ক চন্দন দাস। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন ললিতকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ এবং মনিপুরী নৃত্য পরিবেশন করেন মনিপুরী সেন্ট্রাল ফর আর্টস কালচার এর নৃত্যশিল্পী বৃন্দ। এ সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।