সিলেটে ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের পাগড়ি ও পুরস্কার বিতরণী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মার্চ ২০২৪, ৮:০৪:২৩ অপরাহ্ন
মদীনা শরীফের প্রখ্যাত বুযুর্গ, রাসূলে পাক (সা.) এর ৩৯তম বংশধর সায়্যিদ আল হাবীব আসিম আদি ইয়াহইয়া বলেছেন, প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মুজিযা আল কুরআন। সকল নবীর মুজিযা ইন্তেকালের সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মুজিযা বাকি রয়েছে। আল কুরআন এর অনন্য প্রমাণ। অমুসলিমরাও এটি অস্বীকার করতে পারেনি। আমাদের পূর্বসূরিরা সিলসিলা ও সনদের মাধ্যমে আল কুরআন সংরক্ষণ ও এর শিক্ষাবিস্তারে কতইনা কষ্ট করেছেন। যারা কারি ও হাফিযে কুরআন আপনারা এ কুরআন সংরক্ষণের ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের ২০২৩ সনে হিফয সম্পন্নকারী ছাত্রদের সার্টিফিকেট ও পাগড়ি প্রদান এবং জাতীয় হিফযুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সিলেট নগরীর আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সভাপতি আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী।
হাফিযে কুরআনদের মর্যাদার বিষয়ে আলোকপাত করে প্রধান অতিথি বলেন, কিয়ামতের দিন তাদের বলা হবে, পড়তে থাকো এবং উঠতে থাকো। তোমার স্থান হলো সেই উচ্চ স্থানে, তিলাওয়াত করতে করতে তুমি যেখানে গিয়ে পৌঁছবে। হাফিযে কুরআনগণ মা বাবার প্রতি সর্বোত্তম সদাচারকারী। কারণ, তাদের ওসীলায় কিয়ামতের দিন তাদের মা-বাবার মাথায় নূরের তাজ পরানো হবে এবং তারা বহু মানুষের জন্য সুপারিশ করবেন। যারা হাফিয হয়েছেন আজ তারা খুশি। কিন্তু সেদিন তারা সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন; যেদিন ফেরেশতারা কুরআন অনুযায়ী আমল করার জন্য তাদের বেষ্টন করে রাখবেন। এসময় তিনি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (র.) ও তাঁর সন্তান-সন্ততিগণের সকল খিদমতের মকবুলিয়ত কামনা করেন।
বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মোহাম্মদ নজমুল হুদা খানের পরিচালনায় ও বোর্ডের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী ফুলতলীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-ভারতের প্রখ্যাত বুযুর্গ সায়্যিদ জুনাইদ আহমদ মাদানী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, ধর্মমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব মাওলানা মুফতি এ কে এম মনোওর আলী, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ।
সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শিহাব উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, মদীনা মুনাওয়ারা থেকে আগত রাসূল (সা.) এর ৪০তম বংশধর সায়্যিদ আল হাবীব হামযা আসিম আদি ইয়াহইয়া, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহীম, সিলেটের বয়ো:জ্যেষ্ঠ হাফিযে কুরআন ভুরকীর বড়হুজুর হাফিয আব্দুশ শহীদ, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম, আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম।
এতে বক্তব্য রাখেন বুরাইয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, লক্ষণাবন্দ ফুরকানিয়া হাফিযিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফিয আব্দুল আজিজ, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ মাদরাসা পনাউল্লাহ বাজার এর প্রধান শিক্ষক হাফিয আব্দুল কাদির, বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য লতিফিয়া হিফযুল কুরআন মাদরাসা সিলেট এর পরিচালক হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, শাহজালাল রহমানিয়া দারুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা সিলেট এর প্রধান শিক্ষক হাফিয মাওলানা আব্দুল মুক্তাদির, মাদরাসা-ই-দারুল মোস্তফা’র প্রধান শিক্ষক হাফিয মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।
দুই অধিবেশনে বিভক্ত অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। প্রথম অধিবেশন পরিচালনা করেন হাফিয মাওলানা আবু সাঈদ সেলিম ও হাফিয মাওলানা ইউসুফ মো. শাহান। ভিন্ন ভিন্ন অধিবেশনে কালামে পাক থেকে তিলাওয়াত করেন হাফিয শরীফ উদ্দিন, হাফিয মুনযির আব্দুস সামী ও জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী শিক্ষার্থীবৃন্দ। হামদ, না’ত ও ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন কবি মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল, মাওলানা শাহীদ আহমদ, আব্দুল ওয়াদুদ ময়নুল, শামসুল হাসনাত।
অনুষ্ঠানে হিফয সমাপনকারী ৪৮৪ জন শিক্ষার্থীকে সার্টিফিকেট ও পাগড়ি এবং জাতীয় হিফযুল কুরআন প্রতিযোগিতার জেলা পর্যায়ে বিজয়ী ৪৫ জনকে সম্মাননা ও চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী ১৩ জনকে পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।-বিজ্ঞপ্তি।