সুনামগঞ্জে কালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনষ্ট বইপত্র
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ৯:০০:৫৩ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ থেকে : স্মরণকালের ভয়াবহ কালবৈশাখী ঝড়ের তা-বে সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার ঘরবাড়ি গাছ-গাছালির সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রচন্ড ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের বইপত্রসহ শিক্ষা উপকরণ। এতে বিপাকে পড়েছেন এলাকার সহস্রাধিক স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা রায়পুর হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটিতে অধ্যয়ন করছেন ৩৫০ জন শিক্ষার্থী। দুইদিন আগেও এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখরিত ছিল। গত রোববার কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ করে দিয়েছে মাদ্রাসার দুইটি ভবন। নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্রসহ যাবতীয় শিক্ষা উপকরণ। একইভাবে পুরোপুরি লন্ডভন্ড হয়েছে আস্তমা মহিলা মাদ্রাসা। রায়পুরে মর্নিংবার্ড কিন্ডার গার্টেন দেখে বুঝে উঠার উপায় নেই যে, এখানেও একটি দৃষ্টিনন্দন পাঠশালা ছিল। পাগলা স্কুল এন্ড কলেজের টিনসেটের কয়েকটি ক্লাসরুম দুমড়ে মুচড়ে গেছে। সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ইউনিসেফের জাগরনী চক্র ফাউন্ডেশনের একাধিক প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সকল প্রতিষ্ঠানসহ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার প্রাক প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কিন্ডার গার্টেন, মাদ্রাসা এবং বেসরকারি সংস্থার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা‘র মুহতামিম হাফিজ মাওলানা আবু সাইদ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমাদের মাদ্রাসার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। যা পুষিয়ে উঠতে সময় লাগবে। ঈদের পর শাওয়াল মাস থেকে মাদ্রাসার নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। কিভাবে পাঠ কার্যক্রম শুরু করবো-তা বুঝতে পারছি না।
এদিকে, কালবৈশাখী ঝড়ে যেসব ঘরবাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; সেসব পরিবারের স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বইপত্র ও শিক্ষা উপকরণ বৃষ্টিতে ভিজে ও ঝড়ে উড়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে। যেসব বই রক্ষা পেয়েছে তাও পড়ার উপযোগী নয় বলে জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
পাগলা সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক ইয়াকুব শাহরিয়ার বলেন, ঝড়ে উপজেলার অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের কাছে শিক্ষার্থীরা নতুন বই চাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাঠকার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে নতুন বই সরবরাহ করা প্রয়োজন।
ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনঃসংস্কার করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, ঝড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সুনামঞ্জের জেলা প্রশাসক ও তিনি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের নতুন বই সরবরাহ করার ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহন লাল রায় বলেন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা থেকে বইয়ের চাহিদাপত্র পাঠানো হলে তা স্টক থেকে সরবরাহ করা হবে।