ঈদেও নেই আগের কর্মমুখরতা
ভালো অবস্থানে নেই সিলেটের টেইলারিং শিল্প
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ৯:২১:৩৩ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভালো অবস্থানে নেই সিলেটের টেইলারিং শিল্প। যে কারণে এবারের ঈদেও সিলেটের দর্জিপাড়ায় নেই আগের কর্মব্যস্ততা। এ খাতে স্থবিরতার জন্য অর্থনৈতিক মন্দাভাবকে দায়ী করেছেন এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, কোভিড-১৯ এর পরে এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।
নগরীর শুকরিয়া মার্কেটস্থ সেঞ্চুরি টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী এইচ এম রেজওয়ানুল কবির রেজা বলেন এবারের ঈদে তাদের কাজ-কর্মের খুবই বাজে অবস্থা। এজন্য তিনি অর্থনৈতিক মন্দাভাবকে দায়ী করেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে বাজারে বিপুল সংখ্যক ক্রেতার সমাগম থাকলেও প্রকৃত ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে সিলেটের দর্জিপাড়ায় ঈদের আমেজ কিছুটা ফিরেছে। ক্রেতাদের ভিড়ও কিছুটা বেড়েছে।
নগরীর মধুবন মার্কেটের আইডিয়াল টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স এর স্বত্বাধিকারী জাকির হোসাইন জানান, ঈদকে ঘিরে কাজের চাপ ততটা নেই, যতটা হওয়ার কথা ছিল। করোনার পরে আর ভালো অবস্থানে আসতে পারিনি। তিনি জানান, অর্ডার পেলে তিনি নেবেন।
তিনি জানান, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় কাপড় সেলাইর দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় সিলেটে কাপড় সেলাইর দাম তেমন বাড়েনি বলেও দাবি করেন তিনি।
আল মারজান শপিং সেন্টারের ঐশ্বিকা টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী সঞ্জীব দেব জানান, ঈদের কাজ কম। তিনিও অর্ডার পেলে নেবেন। তিনি জানান, অধিকাংশ প্রবাসী শীত মৌসুমে দেশে আসেন। তখন দর্জিপাড়ায় ব্যস্ততা বাড়ে। তিন-চার বছর ধরে ঈদ মৌসুমের চেয়ে শীতকালে ব্যবসা ভালো হয় বলেও জানান তিনি।
নগরীর বন্দরবাজারস্থ মধুবন সুপার মার্কেটের জামাল টেইলার্সের মো. জামাল আহমদ জানান, আগে ঈদকে ঘিরে শপিংমলের পাশাপাশি দর্জির দোকানগুলোতেও ভিড় দেখা যেত। নিজস্ব ডিজাইন ও পছন্দের কাপড়ে পোশাক তৈরি করতে আসতেন অনেকে। তার এবারও ভালো বলে জানান।
টেইলার্সের একাধিক কারিগর জানান, টেইলার্স ব্যবসার অবস্থা আগের মত নেই। আগে শবেবরাতের পর থেকেই অর্ডার নিয়ে আসতেন অনেকে। এখন সেভাবে অর্ডার আসে না। পুরাতন কাজ করে সময় পার করছি।
করিমউল্লাহ মার্কেটের রেজা টেইলার্সের মো. রেজাউল করিম জানান, তিনি মূলত পাঞ্জাবী-পায়জামার কাজ করেন। ঈদে পাঞ্জাবীর চাহিদা থাকে, এবারও ব্যতিক্রম নয়, অনেক আগেই অর্ডার নেয়া বন্ধ করেছি। যে অর্ডার পেয়েছি, সে কাজ সময় মতো ডেলিভারী দিতে পারলেই হলো।
শুকরিয়া মার্কেটের দর্জি দোকানে আসা তরুণী আয়েশা জানান, মার্কেট ঘুরেও অনেক সময় পছন্দের পোশাক পাওয়া যায় না। পছন্দ হলেও আবার অনেক সময় সাইজ মেলে না। এসব ঝামেলা এড়াতে মনের মতো পোশাক বানাতে দর্জির কাছে এসেছেন তিনি। সব ধরনের সেলাইয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে, বিভিন্ন পাড়া মহল্লার টেইলারিং দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, অতীতে ঈদের যে একটা জমজমাট ভাব থাকতো, সেটি অধিকাংশ দোকানেই নেই। রমজান মাসের অর্ধেক পার হলেও অনেকেই এখনও অর্ডারের অপেক্ষায় বসে আছেন। কখন গ্রাহক আসবে এই ভেবে।
অনেক টেইলার্সের মালিক জানান, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অনেক গ্রাহক নতুন কাপড় বানাতে আসেন। ব্যবসার জন্য এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চান না তারা।