রাজনগরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আমন ক্ষেত, দিশেহারা কৃষকরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১:৪১:৪৯ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার থেকে আব্দুল আজিজ : মৌলভীবাজারের রাজনগরে কৃষিক্ষেতগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পাহাড়ী ঢল ও ভারত থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে সম্প্রতি মৌলভীবাজারে সৃষ্ট বন্যার কারণে জেলার রাজনগর উপজেলায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বন্যায় রাজনগর উপজেলায় মনু নদীর বাঁধের ৪টি স্থান ভেঙ্গে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভাঙ্গন দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্রথমে উপজেলার উপরি অংশের প্রায় ৯০ শতাংশ পাকা আউস ও জমিতে আবাদকৃত রোপা আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে উপজেলার উপরি অংশের পানি হাওর কাউয়াদিঘিতে নেমে আসলে হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাওরের আশপাশে আবাদকৃত আউস ও আমন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৪৬ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর। চলতি বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৬ হাজার ৩১০ হেক্টর জমি। পাকা আউস ধান নষ্ট হয়েছে ৬৩২ হেক্টর, বীজতলা ৩৪ হেক্টর, শাকসবজি ৪০ হেক্টর।
সরেজমিনে, রাজনগর উপজেলার উপরি অংশের মনসুরনগর ও ইউনিয়নের চাটুরা, হংশকলা, ভাঙ্গারহাট, মহলাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আবাদকৃত আউষ ও আমন শতভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। রাজনগর সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম, মহাসহ¯্র এলাকার সদ্য লাগানো আমন ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৩০০ একর ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
কথা হলে মহলাল এলাকার বর্গাচাষী আনকার মিয়া বলেন, তিনি অন্যের জমিতে বর্গাচাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন। চলতি বন্যায় তার ২০ বিঘা রোপা আমন নষ্ট হয়েছে। ২০ বিঘা জমি আবাদ করতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আমি ধার দেনা করে এই ক্ষেত আবাদ করেছি। এখন জমি থেকে পানি সরে গেছে। পুনরায় আবার জমিতে আবাদ করবো যে, সেই সামর্থ আমার আর নেই।
সদর ইউনিয়নের খালিছ মিয়া বলেন, আমার ১৫ বিঘা ক্ষেতের ধান একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আর কোন অবস্থাতে এই জমিতে ধান চাষ হবে না। এবার অগ্রহায়ণ মাসে ঘরে ধান তোলা যাবে না।
রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করছি। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি।